তুষার আহাম্মেদ – মুন্সীগঞ্জে স্বামীকে হত্যার অভিযোগে স্ত্রীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। সেই সথে ৫০,০০০/- (পঞ্চাশ হাজার) টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করার আদেশ দিয়েছেন আদালত ।
আজ মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) দুপুরে মুন্সীগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক কাজী আব্দুল হান্নান এই দন্ডাদেশ দেন। ওই আদালতের পেশকার সাইদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ।
দন্ডপ্রাপ্ত নীলা আক্তার (৪০) মৃত নাজির হোসেন এর স্ত্রী এবং মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার নয়াগাঁও এলাকার জয়নাল আবেদীনের মেয়ে। আগে থেকে কারাগারে ছিলেন নীলা। তাকে আদেশের দিন আদালতে হাজির করা হয়। আসামীর উপস্থিতিতেই এই আদেশ দেন বিচারক। এর আগে স্বামীকে হত্যা করার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকারমূলক জবানবন্দি দেন নীলা।
নিহতের ভাই জাহাঙ্গীর হোসেনের দায়ের করা এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার শহরের মাঠপাড়া এলাকার গিয়াস উদ্দিনের ছেলে নাজির হোসেনের সাথে আসামি লীলা আক্তারের প্রায় ২৫ বছর আগে বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাহাদের এক ছেলে নাইম (১৯) ও এক মেয়ে নূপুর (১৭) রয়েছে। বিয়ের পর হতে সাংসারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়া তাদের বিরোধ চলে আসছিল। ২০১৫ সালের ২০ জুন রাত ৯ টার দিকে নীলা তার স্বামী গৃহে স্বামী নাজিরকে মারধর করে। সে কারনে নাজির খাওয়া দাওয়া না করে তার দোচালা টিনের বসত ঘরের পাটাতনে উঠে শুয়ে থাকলে রাত সাড়ে ৯ টার দিকে বৈদ্যুতিক তার দিয়া গলায় ফাঁস লাগিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে নাজিরকে হোসেনকে হত্যা করে স্ত্রী নীলা। পরে নিহতের লাশের পাশে ৩২ ফুট লাল রঙের বৈদ্যুতিক তার পরে থাকতে দেখে নিহতের স্বজনরা থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই জাহাঙ্গীর হোসেন বাদী হয়ে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় মামলা দায়ের করলে সাক্ষ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত এই দন্ডাদেশ দেন।
এ ব্যাপারে কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক জামাল উদ্দিন বলেঊ, আসামী নিলা আক্তারক গ্রেপ্তারের পর আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী দেন।মামলার সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত আসামি নীলা আক্তারকে দোষিসাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদয়ে আরো এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
সরকার পক্ষের বিজ্ঞ কৌশলী অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন জানান, আসামি নিলা আক্তার পূর্বেই আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দী দিয়েছেন। সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে বিজ্ঞ আদালত আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন। আদালতের রায়ে আমরা সন্তুষ্ট।